Knowing the Malware:
ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যার(Malicious software) এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল ম্যালওয়্যার। এটি এক ধরনের সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যেটি সিস্টেমের স্বাভাবিক কাজকে ব্যহত করতে, গোপন তথ্য চুরি করতে, কোনো সংরক্ষিত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবস্থায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে ব্যবহার করা হয়। বর্তমান সময়ের সবচাইতে বড় সমস্যা হল ম্যালওয়্যার। প্রতিদিন হাজারো সিস্টেম বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার দ্বারা ইনফেক্ট হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হল আপনার কম্পিউটার বা সিস্টেমে ম্যালওয়্যার কি ভাবে আসতে পারে ? বর্তমান সময়ে আপনার কম্পিউটার ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হবার সবচাইতে কমন সোর্স হল ইন্টারনেট। ইন্টারনেটে আপনি যদি কোনো ম্যালিসিয়াস ওয়েবসাইট ভিজিট করে থাকেন, কোনো পাইরেটেড সফটওয়্যার, গেমস, মভি বা ম্যালিসিয়াস কনটেন্ট ডাউনলোড করে থাকেন, ওয়েবসাইটে থাকা এডে ক্লিক করেন এবং কোনো ম্যালিসিয়াস ইমেইল ওপেনের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার আসতে পারে। এছাড়াও অফলাইনের বিভিন্ন সোর্স থেকে ম্যালওয়্যার আসতে পারে, যেমন কোনো ম্যালিসিয়াস ইউএসবি, সিডি, ডিভিডি ইত্যাদির মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার আসতে পারে।
ম্যালওয়্যার মূলত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে তাদের মর্ধ্যে কমন ম্যালওয়্যার হল ভাইরাস, ট্রোজান, র্যানসমওয়্যার, স্পাইওয়্যার, ওয়র্মস । বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার বিভিন্ন ভাবে কম্পিউটারের ক্ষতি করে থাকে।
Definitions:
১। ভাইরাস - তাহলে চলুন সর্বপ্রথম ভাইরাস নিয়ে কথা বলা যাক। ভাইরাস কি করে, এটি সাধারণত নিজের প্রতিরূপ বানিয়ে তা অন্যান্যা প্রোগ্রাম ও ফাইলসমূহের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায় আর এটি আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে আপনার কম্পিউটারে থাকা ফাইল সমূহকে অকেজো করে ফেলেতে পারে । ভাইরাস মূলত আপনার কম্পিউটারে পেরালাইসিস অবস্থায় থাকে যেতক্ষন না আপনি ভাইরাস আক্রান্ত প্রোগ্রামকে রান বা এক্সেকিউট করতেছেন । একবার ভাইরাস আক্রান্ত প্রোগ্রামটি রান বা এক্সেকিউট হয়ে গেলে ভাইরাসটি অ্যাক্টিভ হয়ে যায় এবং নিজের কাজ করা শুরু করে এবং কম্পিউটারে থাকা অনান্য ফাইল সমূহকে আক্রান্ত করে ।
২। ট্রোজান - এবার ম্যালওয়্যারের আরেকটি ক্যাটাগরি ট্রোজান নিয়ে আলোচনা করা যাক । ট্রোজান নামটি নেওয়া হয়েছে প্রাচীন গ্রিক কাহিনী থেকে, যেখানে একটি কাঠের ঘোড়া ব্যবহার করা হয়েছিল গ্রীক সেনা বাহিনীকে সাহায্য করতে যাতে তারা গোপনে ট্রয় নগরীর দখল নিতে পারে।
ম্যালওয়্যারের মর্ধ্যে সবচেয়ে চালাক প্রকৃতির ম্যালওয়্যার হচ্ছে ট্রোজান। কারণ এটি অন্ন্য একটি প্রোগ্রামের সাথে ছদ্মবেশে আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারে । কম্পিউটার বিজ্ঞানে ট্রোজান হর্স বা ট্রোজান বলতে বোঝায় কোনো হানিকারক কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ব্যবহারকারীর কাছে নিজেকে অত্যন্ত কার্যকরী, সুসংবদ্ধ বা আকর্ষনীয় রূপে প্রতীত করে, যাতে ব্যবহারকারী মোহিত হয়ে তাকে ইন্স্টল করে নেয়। আপনার হয়তো মনে হতে পারে এটি একটি আসল সফটওয়্যার, কিন্তু ট্রোজান আপনার কম্পিউটারে প্রবেশের মাধ্যমে আপনার সিস্টেমের ক্ষতি সাধন করে । আপনার কম্পিউটারে থাকা ফাইল সমূহকে ডিলিট, এডিট, মডিফাই, আপার পার্সোনাল ডাটা, ব্রাউজারে সেভ থাকা পাসওয়ার্ড চুরি করার মতও কাজ করতে পারে।
৩। ওয়র্মস - এটি কোনো ভাবে আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারলে নিজেকে গুন করার চেষ্টা করে। এর মানে আপনার কম্পিউটারে ওয়র্মস নিজের অনেকগুলো কপি তৈরি করবে এবং আপনার সিস্টেমকে স্লো করে দিবে। এবং আপনার কম্পিউটার থেকে যদি আরেকটি কম্পিউটারে কিছু কপি করেন তবে এটি সেই কম্পিউটারকেও আক্রান্ত করবে। এবং রিতিমত নিজের হাজার হাজার ফাইল এবং একই নামের ফোল্ডার বারবার তৈরি করে আপনার সিস্টেমকে স্লো করে ফেলবে।
৪। স্পাইওয়্যার - এবার আসি ম্যালওয়্যারের আরেকটি ক্যাটাগরি স্পাইওয়্যার যার মূল কাজই হল আপনার সিস্টেমে নজরদারি করা এবং বিভিন্ন ইনফর্মেশন তার মালিকের কাছে পাঠানো।
৫। র্যানসমওয়্যার - নাম শুনেই অনেকটা বুঝা যাচ্ছে এটি কি ধরনের ম্যালওয়্যার, র্যানসম বলে মূলত মুক্তিপণকে বুঝাই। অথাৎ র্যানসমওয়্যার এমন এক ধরনের প্রোগ্রাম যেটি আপনার হার্ডডিস্কে থাকা সকল ফাইলকে একটি বড় কী দিয়ে এনক্রিপ্ত করে ফেলে। এনক্রিপ্ত কী এতটাই বড় হয় যে মুক্তিপণ না দিলে একে ভেঙে ফেলা প্রায় অসম্ভব। র্যানসমওয়্যার হল ক্রিপ্তোওয়্যারের মত যার মূল উদ্দেশ্য হল হার্ডডিস্কে থাকা ফাইলকে এনক্রিপ্ত করে এবং ডিসপ্লেতে বার্তার মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে মুক্তিপণ দিতে প্রলব্ধ করে।
৬। ব্যাকটেরিয়া - এটি নিজের অনেক গুলো কপি তৈরি করে এবং কম্পিউটারের সম্পূর্ন রিসোর্স, প্রসেসর পাওয়ার, মেমোরি এবং ডিস্কের ব্যবহার করে যার ফলে কম্পিউটার অনেক স্লো হয়ে যায়।
৭।
রুটকীট - কম্পিউটার একবার কোনো ম্যালিসিয়াস প্রোগ্রাম দ্বারা আক্রান্ত হলে তার মূল লক্ষ্য হয় গোপনে থাকা, যাতে সে ধরা না পরে। রুটকীট নামক ম্যালিসিয়াস প্রোগ্রাম, অপারেটিং সিস্টেমে প্রয়োজনীয় রদবদল ঘটিয়ে এই কাজে সাহায্য করে। কোনো ম্যালিসিয়াস প্রসেসকে সকল প্রসেস লিস্ট থেকে গোপন করে রাখে।
৮।
ব্যাকডোর - এটি একবার কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থাকে বাগে আনতে পারলে সেখানে অথাৎ কম্পিউটারে এক অধিকতর রাস্তা স্থাপন করে যার সাহায্যে পরবর্তী সময়ে ঐ কম্পিউটারে অগোচরেই যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।